ধানের জমিতে ক্ষতিকর পোকা দমনে প্রাকৃতিক পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে সুফল পাচ্ছেন ঝিনাইদহের কৃষকরা। ধান উৎপাদনের প্রধান প্রতিবন্ধক ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ। ধান ক্ষেতের পোকা দমনের জন্য কৃষক ব্যাপক হারে কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন। এতে মাটি, পানি, বায়ু ও উপকারী পোকা ঝুঁকিতে থাকে। কিন্তু পার্চিং প্রযুক্তির ব্যবহারে ক্ষতিকর দিকগুলো এখন কমতে শুরু করেছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিভিন্ন মাঠে কৃষকের মাঝে পার্চিং পদ্ধতিতে ধান চাষের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করেন কৃষি বিভাগ। ১৩ জুলাই হলিধানী ইউনিয়নে পাচিং পদ্ধতির উদ্বোধন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আবু হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. সেলিম রেজা, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নুর এ নবী, হলিধানী ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মোফিজ উদ্দিন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আবু হোসেন পার্চিং পদ্ধতিতে চাষাবাদের উপকারিতা সম্পর্কে বলেন, বাঁশের কঞ্চি, গাছের ডাল, টি আকৃতির দণ্ড বা বাঁশের জটা প্রভৃতি খাড়াভাবে জমিতে পুঁতে পাখি বসার কিংবা আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়, তাকে পার্চিং বলে। বর্তমানে ধানের জমিতে পোকামাকড় দমনে এটি একটি সফল কৃষকবান্ধব প্রযুক্তি। পার্চিং করতে কৃষককে ধান চাষে অতিরিক্ত খরচ গুণতে হয় না। কৃষকের বাড়ির আঙ্গিনায় বা রাস্তার ধারে গাছের ডাল প্রাপ্তি সহজলভ্য বিধায় পার্চিং পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ধান উৎপাদনের প্রধান অন্তরায় ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ। ধান ক্ষেতের পোকা দমনের জন্য কৃষক ব্যাপক হারে কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন। এতে করে কিছু উপকারী পোকাও মারা যায় এবং কীটনাশক মানবদেহের জন্যও অনেক ক্ষতিকর।
তিনি আরও বলেন, পার্চিং হলো এমন একটি ব্যবস্থা, পোকামাকড় দমনে এটাকে যান্ত্রিক ব্যবস্থা বলা হয়। যেখানে বিস্তীর্ণ ধান ক্ষেতে রয়েছে সেখানে যেহেতু কোন গাছপালা থাকে না। পোকা খাদক পাখি বসতে পারে না, এজন্য পোকাও খেতে পারে না। আমরা যদি ধানের জমিতে ডাল পুঁতে দিই তাহলে পাখি গুলো বসতে পারে, এবং ফিঙে জাতীয় পাখিগুলো প্রাকৃতিক নিয়মেই ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে জমিতে পোকা মুক্ত করে। এই প্রযুক্তিতে ক্ষতিকারক পোকা মাকড় দমন করা সম্ভব হয়। আবার অন্যদিকে এই পোকামাকড় দমনে আমরা কিন্তু রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করি। এই পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা সুন্দর এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার উৎপাদন করতে পারি।